নিজস্ব প্রতিনিধি: বছর শেষের আগেই ফের ধাক্কা বাংলা সিনেমা জগতে। চলে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়।
বেশ কিছু দিন ধরেই হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন এই শিল্পী। ৬ ডিসেম্বর রবিবার সকালে চলে গেলেন এই প্রবীন অভিনেতা।
১৯৩০ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন মনু মুখোপাধ্যায়। জন্মসূত্রে তাঁর নাম সৌরেন্দ্রনাথ,কিন্তু ডাক নামেই বিখ্যাত তিনি। ১৯৪৬ সালে ভারতী বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন, এরপর মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল তাঁর। অল্প বয়সে পাড়ার নাটকের দলে মহিলা চরিত্রে অভিনয় করতেন। ১৯৫৭ সালে বিশ্বরূপায় যোগ দেন প্রম্পটার হিসেবে। ক্ষুধা নাটকে ঘটনাচক্রে কালী বন্দোপাধ্যায়ের পরিবর্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন মনু মুখোপাধ্যায়। এরপর ধীরে ধীরে উত্তরনের গল্প। হাইকোর্টে কেরানির পদে চাকরি করেতেন, তবে অভিনয় ছিল তাঁর নেশা। নেশার টানে পেশায় ইতি টেনেছিলেন।
মনু মুখোপাধ্যায় প্রথম অভিনীত ছবি মৃণাল সেনের ‘নীল আকাশের নীচে’। পরিচালক সত্যজিত রায়, রোন্যান্ড জোফির সঙ্গে কাজ করেছেন প্রয়াত অভিনেতা। সত্যজিত রায়ের জয় বাবা ফেলুনাথে ভন্ড সাধু মছলিবাবার চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান তিনি। অশনি সংকেত, গণশত্রুর মতো ছবিতেও অভিনয় করেছেন মনু মুখোপাধ্যায়।বাংলা ইন্ডাস্ট্রি মনু মুখোপাধ্যায়ের মতো শক্তিশালী অভিনেতাকে সেভাবে ব্যবহার করেনি, এই অভিযোগ অনেকেই করে থাকেন। দীর্ঘ সময় ক্যামিও চরিত্রে বা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের পর ২০০৩ সালে পরিচালক অভিজিত্ চৌধুরীর পাতালঘর ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন মনু মুখোপাধ্যায়। পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালের আলিনগরের গোলোকধাঁধা ছবিতেও। রুপোলি পর্দার পাশাপাশি টিভি সিরিয়ালে নিয়মিত অভিনয় করেছেন তিনি। পৌষ ফাগুনের পালা, সংসার সুখের হয় রমনীর গুণের মতো ধারাবাহিকে মনু মুখোপাধ্যায়কে দেখছেন বাঙালি দর্শক। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলা বিনোদন জগত।