ক্যানভাস নিউজ
Image default
অন্যান্য

শতবর্ষে হলো না পৌষমেলা, মনখারাপ শান্তিনিকেতনের

নিজস্ব প্রতিনিধি: শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা হল পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক মেলবন্ধন। শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার সঙ্গে যেমন জড়িয়ে আছে বাঙালিদের আবেগ৷ তেমনই কেনা-বেচার মাধ্যমে রয়েছে বহু মানুষের কিছুটা আর্থিক উন্নতির অবকাশ৷ করোনা অতিমারিতে একত্রিত হওয়ার উপায় নেই। অতিমারির প্রভাব পড়ল শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলাতেও। এবছর ২০২০তে মেলা ছাড়াই পৌষ উৎসব পালিত হল বিশ্বভারতীতে।

ছাতিমতলায় উপাসনা

১৮৪৩-এর ৭ পৌষ ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৮৪৫ সালে তাঁর ইচ্ছানুসারে ব্রাহ্মদের মধ্যে সৌহার্দ্য বৃদ্ধির জন্য কলকাতার গোরিটি বাগানে একটি মেলার আয়োজন হয়। তবে তা ধারাবাহিক ভাবে হয়নি। ১৮৮৮ সালে দেবেন্দ্রনাথ একটি ট্রাস্ট-ডিড তৈরি করে লেখেন, ট্রাস্টিরা যেন পৌষমেলা শান্তিনিকেতনে করার চেষ্টা করেন। ১৮৯১ সালের ৭ পৌষ স্থাপিত হয় উপাসনা মন্দির। সে দিনই দেবেন্দ্রনাথের দীক্ষা দিবসের বাৎসরিক উপলক্ষে মন্দিরে উপাসনার মধ্য দিয়ে পৌষ উৎসব পালন শুরু হয়। এর পর ১৮৯৪ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে আয়োজিত হয়ে আসছে পৌষমেলা।

আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে বিশ্বভারতী

১২৬ বছরের ইতিহাসে মোট দু’বার বন্ধ থেকেছে পৌষমেলা।এই নিয়ে তৃতীয়বার বাতিল হল পৌষ মেলা। এর আগে ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষের কারণে ও ১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য পৌষ মেলা বাতিল হয়েছিল। এরপর ২০১৪ সালের উপাচার্য এবং আধিকারিকদের একাংশ ঘেরাও থাকার কারণে ছাতিমতলায় পৌষের উপাসনা অনুষ্ঠান বিঘ্নিত হয়েছিল৷ এছাড়া পৌষ মেলা এত বছরে কখনও বন্ধ হয়নি৷ তবে ওই বছরগুলিতেও পৌষ উৎসব পালিত হয়েছিল নিয়ম মেনে। এবছর ২০২০তেও পৌষ উৎসব পালিত হয় নিয়ম মেনে। ১৮৯৪ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত পৌষ উৎসবের উপাসনা স্থান ছিল ব্রক্ষ্ম মন্দির বা কাঁচ মন্দিরে। রবীন্দ্র প্রয়াণের পর ১৯৫০ সাল থেকে ৭ পৌষের উপাসনা স্থান বদল করে মন্দির থেকে হয় ছাতিমতলা৷
৭ পৌষ (২৩ ডিসেম্বর,২০২০) বুধবার সকালে ছাতিমতলায় উপাসনার মাধ্যমে এবারের পৌষ উৎসবের শুভ সূচনা হয়। তবে ভিড় না থাকলেও উৎসবের আমেজে খামতি ছিলনা। উপাসনা, বৈতালিক, খ্রিস্টোৎসব -সহ নানান অনুষ্ঠানে জমে উঠেছিল উৎসবের তিনদিন। এবছর শতবর্ষে পা দিয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠা করা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি ভাষণ দিচ্ছেন আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তিনদিনের পৌষ উৎসবের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানগুলি নিয়ম মেনে পালন করে বিশ্বভারতী। ৭ পৌষ ছাতিমতলায় উপাসনা হয়, বৈতালিক হয়, সন্ধ্যায় আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছিল বিশ্বভারতী। ৮ পৌষ সকালে আম্রকুঞ্জে বিশ্বভারতীর শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রধান তথা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিকালে মহর্ষি স্মারক বক্তৃতা হয়। ৯ পৌষ সকালে পরলোকগত আশ্রম বন্ধুদের স্মৃতিচারণ করাহয়। সন্ধ্যায় খ্রিস্টোৎসবের মধ্য দিয়ে পৌষ উৎসবের সমাপ্তি হয়।
তবে পড়ুয়া থেকে শান্তিনিকেতনের সাধারণ মানুষ, মেলা না হওয়ার আক্ষেপ সকলের মধ্যেই।

Related posts

করোনার সাথে লড়াইয়ে পরাজিত হলেন অভিনেতা – পরিচালক দেবীদাস ভট্টাচার্য

ক্যানভাস নিউজ

গোবরডাঙায় ট্যাগের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন

আজ ১০ জানুয়ারি কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে দেখান হবে…

ক্যানভাস নিউজ