ক্যানভাস নিউজ
Image default
নাটক

সংস্কৃতিতে দেশের মধ্যে সর্বাধিক অনুদান, পশ্চিমবঙ্গের নাট্যদল গুলির

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক দেশ ব্যাপী সংস্কৃতি ক্ষেত্রে ২০২৩-২৪ এর অনুদানের তালিকা প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি ২০২৩-২৪ সালের অনুদানের তালিকা প্রকাশ পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মোট ২৯৬ টি নাটকের দল অনুদান পেয়েছে,যা সারা ভারতবর্ষের অন্য রাজ্য গুলোর তুলনায় সর্বাধিক।
জানা যাচ্ছে, সারা দেশে একাধিক নাট্যদলের অনুদান বাতিল করা হয়েছে তার মধ্যে এ রাজ্যের ১০এর অধিক নাট্যদল রয়েছে। অনুদান বাতিল দল গুলোর মধ্যে রয়েছে, সংসৃতি, সায়ক, দমদম শব্দ মুগ্ধ, অশোকনগর নাট্যমুখ, গোবরডাঙা শিল্পায়ন সহ বিভিন্ন নাট্যদল।

অনুদান বন্ধ হওয়া নাট্য দলের কেউ সবল, কেউ কর্পোরেট তহবিল ব্যবহার করে প্রযোজনা করেছে, কেউ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারেনি, এসব কারণ দেখিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রক ২০২৩-২৪ এ তাদের অনুদান বাতিল করেছে।
অনুদান থেকে বাদ পড়া সংসৃতির নির্দেশক দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন যে, “সবকা সাথ সবকা বিকাশ’, না কি যারা আমাদের সঙ্গে রয়েছে তাদেরই দেখবো? সবাইকে নিয়ে চলতে হলে যাদের অনুদান কাটা হয়েছে তাদের ফেরানো হোক।’ সায়ক-এর নির্দেশক মেঘনাদ ভট্টাচার্য বলেন যে, ‘গত ১৮ বছর ধরে আমরা অনুদান পাচ্ছি।আমার ধারণা কেউ বেছে বেছে তালিকা করে দিয়েছে।’ পরিচালক রাকেশ ঘোষ, সৌরভ পালোধি সহ অন্যান্য অনুদান থেকে বাদপড়া নাট্যদলের কর্ণধাররা ব্যক্তিগত অসূয়ার কথা তোলেন। একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তারা অনুদান বাতিলের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান।
এই বিষয়ে নাট্য ব্যক্তিত্ব অধিকারী কৌশিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে, ‘পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের সংস্কৃতি জগতে অনুদান সার্বিক ভাবে চালু হয় ২০০০ সাল নাগাদ। সম্প্রতি ২০২৩-২৪ সালের অনুদানের তালিকা প্রকাশ পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মোট ২৯৬ টি নাটকের দল অনুদান পেয়েছে,যা সারা ভারতবর্ষের অন্য রাজ্য গুলোর তুলনায় সর্বাধিক। ২০২৩-২৪ এ পশ্চিমবঙ্গের অতিরিক্ত ১৯ টি দলকে অনুদানের আওতায় আনা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের অনুদান প্রাপ্ত ২৯৬ এর মধ্যে ৮০ টি দলের অনুদান আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। ভারত সরকার গতবারের তুলনায় এবারের বাজেটে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অনুদান বাড়িয়েছে। আগে গুরু- শিষ্য পরম্পরায় অর্থাৎ ডিরেক্টরের অনুদান ১০০০০ ছিল, যেটা এবছর ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বেড়ে ১৫০০০ হয়েছে,এবং শিষ্য, মানে দলের সদস্য/সদস্যার যার অনুদান ছিল ৬০০০ বেড়ে ১০০০০ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের গোটা দশেক দল হয়তো তাদের সরকারি অর্থ ব্যবহারের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারেনি সেই কারণে হয়তো সংস্কৃতি মন্ত্রক ২০২৩-২৪ এ তাদের গ্রান্ট বাতিল করেছে। সরকার তো বিদেশ ভ্রমনের জন্য বা বাড়িতে মার্বেল বসানোর জন্য অর্থ দেবেনা! সেই অস্বচ্ছ কিছু দলের কর্ণধার প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন, সেটা তারা করতেই পারেন, সেটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সরকারেরও তো অধিকার আছে, সাধারণ মানুষের ট্যাক্স এর টাকায় যে নাট্যচর্চার জন্য অনুদান দেওয়া হচ্ছে সেটা ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে কিনা দেখা । যারা নিজেদের অনুদান বাতিল হয়েছে বলে বিজেপি বিরোধী প্রোপাগান্ডা করতে চাইছেন তারা কি তাহলে এতদিন অনুদান হাতানোর জন্য থিয়েটার করতেন? সরকারি অর্থ সাহায্যের নাটকে ১০০০ টাকা বা ৫০০ টাকার টিকিট বিক্রি করে মুনাফা লুটতে চাননি তারা? আপনাকে ব্যবসা করার জন্য তো সরকার টাকা দেয়না। আপনাকে সরকার টাকা দেন সমাজে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা ও প্রচারের জন্য। বিষয়টি সম্পূর্ণ সংস্কৃতি মন্ত্রকের বিষয়, অহেতুক ও অযৌক্তিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা, যা আপনারা অনুদান পেলে বা না পেলেও এমনিতেই করে থাকেন। সেটা আজ সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, অনুদান পেলে বা না পেলেও আপনারা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তা করুন কিন্তু নিজেদের দিকে তাকান, আয়নার সামনে দাঁড়ান। আর কয়েকজনের মন্তব্য দেখেছি, যেখানে ওনারা বিজেপি মুখপত্র মাননীয় শমীক ভট্টাচার্য এর সাথে যোগাযোগ করেছেন, যদিও এটি সংস্কৃতি মন্ত্রকের বিষয় বিজেপির এতে কোনো হাত বা উৎসাহ কিছু আছে বলে আমার জানা নেই। তবে ওনাদের বক্তব্য অনুযায়ী – বিজেপির বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়াতে বিজেপিরই সাহায্যপ্রার্থী হওয়ার এই হিপোক্রেটিক চর্চা ওনারা বোধহয় ভালোই রপ্ত করেছেন। কই শুধু বিজেপি করার জন্য যখন কোন নাট্যশিল্পীকে নাট্যদল থেকে বা নাটক থেকে ঘোষণা করে বাদ দেওয়া হয়,অপমান করা হয়,খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয় তখন কোথায় গুঁজে রাখেন গণতন্ত্র? আর আপনারা ব্যক্তিগত অসূয়ার কথা বলছেন? ব্যাঙ কোলে নিলে সাপও হাসবে। আপনাদের ব্যক্তিগত অসূয়ার কারণে মফস্বল থেকে আসা কত স্বপ্ন দেখা তরুণ তরুণীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়েছে সেসব হিসেব দিতে গেলে একটা মোটা ডাইরীও কুলোবেনা।কত ছেলে মেয়েকে ব্যক্তিগত অসূয়ার কারণে,বা নিজের বৌ ছেলে কে প্রধান চরিত্র দেবেন বলে দল থেকে তাড়িয়েছেন তার হিসেব না হয় অন্য কোনোদিন হবে। তাই ব্যক্তিগত অসূয়ার গল্প শোনাবেন না।
নাটকে শিল্পের স্বাধীনতার নাম করে শিবলিঙ্গে লাথি মারা,কাশ্মীরের হিন্দু মেয়েরা বেশ্যা,এইসব ট্যাগলাইন বানানোটা স্বাধীনতা না হিন্দুফোবিক মানসিকতা??আর শিল্পের স্বাধীনতা প্রকাশের জন্য সবসময় হিন্দু ধর্মকেই বেছে নেওয়া কেন??শিল্পের স্বাধীনতার নাম করে যখন কারো ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয় তখন প্রতিবাদ করেননা তো??কোনো ব্যক্তিমানুষের ভন্ডামি প্রকাশ করা আর আপামার মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা একজিনিস বুঝি??বেশি ঘাটাবেননা আপনাদের অনেকের থেকেই মঞ্চে অনেক দামী অভিনয় করেছি। সারা বাংলায় যখন নারী ধর্ষণ, নারী অত্যাচার,চাকরি চুরি,খুন, এইসব চলছে তখন মুখে ন্যাকড়া গুঁজে রেখে কেন্দ্রের টাকায় টান পড়তেই প্রতিবাদ জেগে উঠেছে আপনাদের কয়েকজনের?সাধারণ মানুষ আপনাদের চিহ্নিত করে ফেলেছে।’ এমন নানান প্রশ্ন তুলছেন নাট্য ব্যক্তিত্ব অধিকারী কৌশিক।

Related posts

আমরাও পারি – নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরলেন আজকের নারীরা

ক্যানভাস নিউজ

রঙ্গসেণার সপ্তম রঙ্গোৎসব

ক্যানভাস নিউজ