নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা বোঝা মাথাই নিয়েই ২৩ ডিসেম্বর বুধবার আলিপুরের উত্তীর্ণ মুক্তমঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত গান দিয়ে সঙ্গীত মেলা এবং বিশ্ববাংলা লোকসংস্কৃতি উৎসবের সূচনা হয়। এরপর প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে ‘ও আকাশ সোনা সোনা’ গান গেয়েছেন একঝাক শিল্পী। তার পর প্রদীপ জ্বালিয়ে সঙ্গীত মেলা ও বিশ্ববঙ্গ লোক সংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“সম্প্রীতি যদি কোথাও থাকে, সেটা হল সঙ্গীত। সঙ্গীতের কোনও সীমানা নেই। কোনও ভেদাভেদ নেই।” সৌমিত্রকে স্মরণ করে ‘ও আকাশ সোনা সোনা’ গানটা গাওয়া প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই গানটা আমার খুব প্রিয়। কিন্তু সোনার রত্নকে আমার হারিয়ে ফেলেছি’। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ৬৩০টি মেলা করা হবে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারিতে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা গায়ক ইন্দ্রনীল সেন, রূপঙ্কর বাগচী, মনোময় ভট্টাচার্য, শ্রীকান্ত আচার্য, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, জোজো, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, সুরজিৎ, শিবাজী চট্টোপাধ্যায়, পর্ণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, দিব্যয্যোতি শান্তনু, অরিত্র দাশগুপ্ত-সহ বিশিষ্ট শিল্পীরা।

এদিন অনুষ্ঠানে মীনা মুখার্জি, পল্লব ঘোষ, ব্রক্ষ্মতোষ চট্টোপাধ্যায়, সুজাতা সরকার, কৃষ্ণা মজুমদার, জয়তী চক্রবর্তী, তবলা শিল্পী ভগীরথ রায়, যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পী সুনেধ চ্যাটার্জি, ভাওয়াইয়া শিল্পী সুনিতি রায়, সারিন্দা বাদক মঙ্গলা কান্ত রায়, নেপালী সঙ্গীত সুরকার মনিকমল ছেত্রী, খনগান শিল্পী সৌরভ রায়, ফকিরি গান শিল্পী নুর আলম, কীর্তন শিল্পী মুক্তি বৈরাগ্য, সাঁওতালি গান শিল্পী বাসন্তী হেমব্রম, নাটুয়া গান শিল্পী হরিরাম কালিন্দি, ঝুমুর গান শিল্পী সন্ধ্যারানি মাহাতো, পীরের গান শিল্পী ইমরান খান, পটচিত্র গান শিল্পী নুর জাহান চিত্রকর, আদিবাসী গান শিল্পী হিরামনি মাণ্ডি ও সম্পা বিশ্বাস এই ২১ জন শিল্পীকে সঙ্গীত সম্মান প্রদান করা হয়। অসিমা মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গীত মহাসম্মান প্রদান করা হয়।

কোভিড বিধির কথা মাথায় রেখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ৭ দিনের সঙ্গীত মেলা অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্র সদন,একতারা মুক্তমঞ্চ, শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবন, ফণীভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রামঞ্চ, হেদুয়া পার্ক, মধুসূদন মুক্তমঞ্চ, দেশপ্রিয় পার্ক, মোহর কুঞ্জ এবং রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমি মুক্তমঞ্চ এই ১০টি মঞ্চে।পাশপাশি ২৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চারুকলা পর্ষদ প্রাঙ্গন সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে এবং ১ জানুয়ারি একতারা মুক্তমঞ্চে ‘বিশ্ববাংলা লোকসংস্কৃত উৎসব’ চলবে। অন্যদিকে দেশপ্রিয় পার্কে আসর জমাবে জনপ্রিয় একঝাঁক নতুন-পুরনো বাংলা ব্যান্ড। কলকাতার বিভিন্ন পাড়ায় অনুষ্ঠিত হবে ‘পাড়ায় পাড়ায় সঙ্গীতমেলা’। কিংবদন্তি শিল্পী, সুরকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত গগনেন্দ্র প্রদর্শনশালায় এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলা আধুনিক গান ও চলচ্চিত্রের গানে লোকসঙ্গীতের প্রভাব নিয়ে এক আলোচনা সভা বসবে বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টেয়, একতারা মুক্ত মঞ্চে।